Close

বাল্যবিবাহ জাতির অগ্রগতির জন্য বড় বাধা

১১ অক্টোবর বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস। প্রতিবছর বাংলাদেশের জন্য দিনটি আত্মবিশ্লেষণের এবং কন্যাশিশুদের কণ্ঠ ও আকাঙ্ক্ষা নিয়ে চিন্তাভাবনার আরেকটি সুযোগ। বর্তমান পরিস্থিতিতে কন্যাশিশুদের বিয়ের বিরুদ্ধে কেন নতুন অঙ্গীকার ও সাহসী উদ্যোগ প্রয়োজন, তা নিয়ে লিখেছেন এম নিয়াজ আসাদুল্লাহ, জাকি ওয়াহহাজ ও সারা হোসেন

  • এম নিয়াজ আসাদুল্লাহ, জাকি ওয়াহহাজ ও সারা হোসেন

প্রতিবছর ১১ অক্টোবর বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস পালিত হয়। এই দিবসকে মেয়েদের দিনও বলা হয়। কিশোরী ও কন্যাসন্তানদের স্বপ্ন, আকাঙ্ক্ষা ও প্রয়োজন মেটানোর জন্য প্রত্যেকের রাষ্ট্রীয় ও পারিবারিক পর্যায়ে প্রতিশ্রুতির পুনর্বিবেচনা ও মূল্যায়ন বিচারে দিনটি বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। বিগত দশকে কিছু অগ্রগতি সত্ত্বেও বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে মেয়েশিশুরা এখনো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে।

জাতিসংঘের বিভিন্ন মানবাধিকার সনদ অনুযায়ী, ধর্ম, ভৌগোলিক অবস্থান বা বয়সনির্বিশেষে প্রতিটি কন্যাশিশুর নিরাপদ, শিক্ষিত এবং সুস্থ জীবনের অধিকার রয়েছে। এই অধিকারগুলো নিশ্চিত করতে বিশ্বজুড়ে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় কন্যাশিশুর শারীরিক ও মানসিক গঠন; উন্নয়ন এবং সামাজিক ক্ষমতায়ন ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বিশেষত শিক্ষাক্ষেত্রে এবং জনপরিসরে তাদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

এই অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে ২০১৫ সালে ‘মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলস’ (এমডিজি) এবং পরবর্তী ‘সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস’ (এসডিজি) নির্ধারিত টেকসই উন্নয়নর কর্মসূচি বিবেচনায় কন্যাশিশুদের জন্য কিছু নতুন ও সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও প্রচলিত সামাজিক প্রথা ও সনাতন রীতিনীতি এখনো বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি কন্যাসন্তানকে তাদের পূর্ণ বিকাশের সম্ভাবনা অর্জন থেকে বঞ্চিত করছে।

এসডিজি ক্যাম্পেইন চালু হওয়ার পর থেকে বাল্যবিবাহের হার কমলেও অতীতের সেই অর্জন নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন এবং কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাবের কারণে বহু সংকট মিলিয়ে বাল্যবিবাহের প্রকোপ আবারও বাড়ছে, যা অতীতের অগ্রগতিকে বিপরীত দিকে ধাবিত করতে পারে। ইউএনএফপিএর অনুমান অনুযায়ী, মহামারির প্রভাবে ২০৩০ সালের মধ্যে আরও ১ দশমিক ৩ কোটি কন্যাশিশু বিয়েতে বাধ্য হতে পারে।

ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে জীবিতদের মধ্যে ৬৪ কোটি মেয়ে ও নারীর শৈশবে বিয়ে হয়েছে এবং প্রতিবছর ১ দশিমক ২ কোটি কিশোরীর বিয়ে হয়েছে। গত পাঁচ বছরে শৈশবে বিয়ে হওয়া ২০-২৪ বছর বয়সী নারীদের হার ২১ থেকে ১৯-এ নেমে এসেছে। তবে ২০৩০ সালের মধ্যে বাল্যবিবাহ নির্মূল করার এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হলে বৈশ্বিক হারে ২০ গুণ দ্রুত হ্রাস ঘটাতে হবে।

মহামারি–পূর্বোত্তর সময়ে দক্ষিণ এশিয়ায় বাল্যবিবাহের হার কমে যাওয়ার কারণে বৈশ্বিক হারে কিছু উন্নতি হয়েছে। তবু এ অঞ্চল বিশ্বের প্রায় অর্ধেক (৪৫ শতাংশ) বাল্যবিবাহের শিকার কন্যাশিশুদের আবাসস্থল। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। তবে এখনো এ সমস্যায় জর্জরিত বৈশ্বিক জনগোষ্ঠীর মোটের এক-তৃতীয়াংশের বাস ভারতে।

সে বিবেচনায় বাংলাদেশ আরও একটি জটিল কেস স্টাডি। সমস্যাটি মোকাবিলায় প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বাল্যবিবাহের সর্বাধিক হার বিচারে বাংলাদেশ এখনো দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে। ইউনিসেফের ২০১৯ সালের একটি জরিপের (বাংলাদেশ মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভে–এমআইসিএস) তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে ৫১ শতাংশ তরুণীর বিয়ে হয়েছিল তাঁদের শৈশবে।

কোভিড-১৯ মহামারির কারণে বাল্যবিবাহের পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ২০২০ সালে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) পরিচালিত এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০-২৪ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে ৩১ দশমিক ৩ শতাংশ নারী ১৮ বছর হওয়ার আগেই বিয়ে করেছিলেন। ২০২২ সালে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪০ দশমিক ৯ শতাংশে, যেখানে গ্রামীণ এলাকায় এর হার আরও বেশি, ৪৪ দশমিক ৪।

এ বছরের আন্তর্জাতিক কন্যা দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘ভবিষ্যতের জন্য মেয়েদের ভাবনা’ (গার্লস ভিশন ফর দ্য ফিউচার)। প্রতিবছর বাংলাদেশের জন্য দিনটি আত্মবিশ্লেষণের এবং কন্যাশিশুদের কণ্ঠ ও আকাঙ্ক্ষা নিয়ে চিন্তাভাবনার আরেকটি সুযোগ। তাই আমরা প্রশ্ন করতে চাই, আমাদের দেশে কেন এখনো বাল্যবিবাহের এত উচ্চ হার? নিজেদের ব্যক্তিগত জীবন এবং আত্মনিয়ন্ত্রণে কেন ছেলেদের তুলনায় কন্যাশিশুরা এত পিছিয়ে থাকছে?

১৯৯০ সালে বাংলাদেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলে উপস্থিতিতে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা পিছিয়ে ছিল। ১৯৯৪ সালে নারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় সহায়তা কর্মসূচির (এফএসএসএপি) সূচনা ছেলে-মেয়ের শিক্ষায় অংশগ্রহণ হারের বৈষম্য ব্যাপক পরিবর্তন করেছে। তিন দশক ধরে শিক্ষাক্ষেত্রে নারীবান্ধব সংস্কার সত্ত্বেও বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে বিশ্বের বাংলাদেশ অবস্থান অষ্টম।

বিগত তিন দশকে বিভিন্ন উদ্যোগ, যেমন কিশোর-কিশোরী উন্নয়ন ক্লাব, দক্ষতা প্রশিক্ষণ কর্মসূচি এবং আর্থিক সুবিধা বাস্তবায়িত হয়েছে। এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ৪৮৯টি উপজেলা পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত ‘স্বর্ণ-কিশোরী’ ফাউন্ডেশন ক্লাব। সামাজিক অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি এসেছে আইনি সংস্কার।

আইনে ন্যূনতম বিয়ের বয়স মেয়েদের জন্য ১৮ এবং ছেলেদের জন্য ২১ বছরই অপরিবর্তিত থাকলেও ২০১৭ সালে অপ্রাপ্তবয়স্ক বিয়ের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান নিয়ে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন সংশোধন করা হয়েছে। তবে জনসচেতনতার অভাব এবং মেয়েদের জন্য যথার্থ বিকল্প শিক্ষা ও কর্মসংস্থান বা উপার্জনের সুযোগ না থাকার কারণে এ আইন এখন পর্যন্ত পর্যাপ্ত প্রভাব ফেলতে পারেনি।

আমাদের সাম্প্রতিক মাঠপর্যায়ের গবেষণা থেকে আমরা জানতে পেরেছি যে শুধু শিক্ষা বিনিয়োগ বৃদ্ধি করে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ৪টি জেলার (ঢাকা, দিনাজপুর, খুলনা, পটুয়াখালী) শহুরে পাড়ায় পরিচালিত ২১ হাজার ২৩৬টি পরিবার নিয়ে আদমশুমারি এবং ৩ হাজার ৯৯৭টি পরিবার নিয়ে জরিপের ভিত্তিতে আমরা বাংলাদেশের কিশোরীদের বৈবাহিক এবং সামাজিক-অর্থনৈতিক প্রোফাইল পুনঃপরীক্ষা করেছি। ১৮-২৪ বছর বয়সীদের মধ্যে গড় শিক্ষার অর্জন ছিল ৮ দশমিক ৭৫ বছর, যা কিছুটা স্বস্তিদায়ক। তবে শিক্ষার এই অগ্রগতি বাল্যবিবাহ রোধ করতে পর্যাপ্ত নয়। আমাদের গবেষণা জনসংখ্যায় ২ শতাংশ যুবতী নারী ইতিমধ্যে বাগ্‌দান সম্পন্ন করেছেন এবং বাড়তি ৫৭ শতাংশ ইতিমধ্যে বিবাহিত, যাঁদের মধ্যে ৫৩ দশমিক ৮ শতাংশ অপ্রাপ্তবয়সে (১৮ বছর বয়সের আগে) বিবাহিত।

আমাদের গবেষণার আরেকটি বিশেষ দিক হচ্ছে এটি কেবলই শহুরে পৌর এলাকাগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। এ ক্ষেত্রে উদ্বেগজনক যে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীতে ৬৫ শতাংশ বাল্যবিবাহের শিকার; যদিও আমাদের ১৮-২৪ বয়সী উত্তরদাতাদের গড় শিক্ষার অর্জন ৯ দশমিক ৫ বছর। এ তথ্য বিচারে এটাই প্রতীয়মান হয় যে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে প্রয়োজন নতুন উদ্যোগ, যা কেবল মেয়েদের আনুষ্ঠানিক শিক্ষায় বিনিয়োগের প্রচলিত আহ্বানের বাইরে অন্যান্য কৌশল নিয়ে বিবেচনা করতে সহায়তা করবে।

এই ফলাফলগুলো ‘সেফ প্লাস’ প্রোগ্রামের বেজলাইন জরিপের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যা যুব নেতৃত্বাধীন একটি নতুন সামাজিক উদ্যোগ। এটা আমরা গত বছর চালু করেছি। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে অপ্রাপ্তবয়সের বিয়ের ঝুঁকিতে থাকা সমবয়সীদের প্রাথমিক পর্যায়ে সহায়তা প্রদান। গ্লোবাল ইনোভেশন ফান্ড দ্বারা অর্থায়িত এবং বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) সহযোগিতায় বাস্তবায়িত সেফ প্লাস প্রোগ্রামের লক্ষ্য হলো স্থানীয় যুবগোষ্ঠীগুলোর একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করা, যা তাদের সম্প্রদায়ে বাল্যবিবাহ মোকাবিলা ও নিরোধ করতে সক্ষম হবে। এ প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে একদিকে যেমন তরুণদের নেতৃত্ব ও আলোচনার প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে, তেমনি এর পাশাপাশি বাল্যবিবাহ আইন এবং সংশ্লিষ্ট বিধান সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া হয়েছে।

বর্তমানে প্রোগ্রামটি বাংলাদেশের ৫০টি শহর এলাকায় কার্যকর রয়েছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ২৫ জন প্যারালিগ্যাল তাঁদের সম্প্রদায়কে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে আইনি পদক্ষেপ সম্পর্কে অবহিত করেছেন। তাঁরা পরবর্তী সময়ে ১৬ থেকে ২৫ বছর বয়সী ১০-১৫ জন যুবক-যুবতীর ৫০টি দলকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন, যাঁরা এখন প্রাথমিক বিয়ে প্রতিরোধে এবং ভুক্তভোগীদের সহায়তা করতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। অন্যান্য প্রোগ্রাম কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে ২০০টি ‘উঠান বৈঠক’ মডেল অনুযায়ী ‘আইনি সচেতনতা সেশন’, আইনি সহায়তা শিবির এবং জেলা স্তরের নেটওয়ার্কিং সভা।

সেফ প্লাসের একটি উদ্ভাবনী দিক হলো মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে অংশীদারত্ব এবং তাদের ১০৯ হেল্পলাইন–সংক্রান্ত সুবিধা ও সেবার সমন্বয়। আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো কার্যক্রম পরিচালনায় স্থানীয় তরুণদের আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, যেমন প্রকল্প কর্মকাণ্ডের ‘রিয়েল-টাইম রিপোর্ট’ ও ট্র্যাকিংয়ের জন্য নতুন একটি মোবাইল অ্যাপের উদ্ভাবন করা হয়েছে। এই প্রোগ্রামের পুরো ফলাফল পেতে ২০২৬ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আমরা আশাবাদী যে ‘সেফ প্লাস’ প্রকল্প–সংশ্লিষ্ট তরুণেরা তাঁদের সম্প্রদায়ের মধ্যে চেঞ্জমেকার বা ‘পরিবর্তনকারী’ হিসেবে হবেন।

বাংলাদেশে বাল্যবিবাহ বন্ধের কর্মসূচিতে নতুন চিন্তাভাবনা এবং উদ্ভাবনী কৌশলের প্রয়োজন। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা একটি নীতিগতভাবে স্বীকৃত ও সামাজিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হলেও আমাদের সাম্প্রতিক গবেষণা ইঙ্গিত দেয় যে এখন সময় এসেছে নতুন উদ্যোগ গ্রহণের। সেফ প্লাসের মতো আরও লক্ষ্যভিত্তিক ও স্থানীয় সম্প্রদায়বান্ধব প্রকল্প আগামী দিনগুলোতে টেকসই সামাজিক পরিবর্তন আনতে সহায়ক হতে পারে।

বাল্যবিবাহের প্রকোপ নিরসনে এই প্রকল্পের চূড়ান্ত প্রভাব যা–ই হোক না কেন, সেফ প্লাস ইতিমধ্যে নিবেদিতপ্রাণ তরুণদের নেতারা একটি কার্যকর সামাজিক নেটওয়ার্ক তৈরি করেছেন। এখানে প্রত্যেক সদস্য তাঁদের সম্প্রদায়ের সামাজিক রূপান্তর নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর এবং এ–সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা করতে সম্পূর্ণভাবে সক্ষম ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হবে।

এ বছরের আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস পালনকালে তাই আমাদের প্রত্যাশা যে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা সবাই সম্মিলিতভাবে কন্যাশিশুর অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং উন্নয়নের লক্ষ্যে আমাদের অঙ্গীকার পুনরায় নিশ্চিত করি। বাল্যবিবাহপ্রথা শুধু মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়; এটি পুরো জাতির অগ্রগতির জন্য একটি বাধা।

আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে আমরা আগামী প্রজন্মের কাছে দায়বদ্ধ। তরুণদের আত্মত্যাগর মধ্যেই এসেছে ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’। তাই জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান–পরবর্তী বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্নপূরণের কর্মসূচির অংশ হোক নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্য দূর করা। এ জন্য প্রয়োজন বাল্যবিবাহ বন্ধে একতা ও অঙ্গীকার।

জীবন ও বাক্‌স্বাধীনতার অধিকার নিশ্চিত করতে অনেক নারী শিক্ষার্থী এবার জুলাইয়ের আন্দোলনে সম্পৃক্ত হয়েছিলেন। আন্দোলন–পরবর্তী সময়ে আমরা আশা করব, তাঁদের এই ভূমিকা একটি অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। আমাদের তরুণ-তরুণীরা সেই লক্ষ্য অর্জনে আরও দৃঢ়ভাবে কাজ করবেন এবং বাংলাদেশের সব কন্যাশিশু, তরুণী ও কিশোরীর জন্য একটি উজ্জ্বল, আরও ন্যায়সংগত ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে এই সরকার নতুন সামাজিক উদ্যোগ উৎসাহিত করবে।

প্রথম প্রকাশ : প্রথম আলো, ১১ অক্টোবর ২০২৪

  • এম নিয়াজ আসাদুল্লাহ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির প্রফেসরিয়াল ফেলো এবং ফেমিনিস্ট ইকোনমিস্ট জার্নালের সম্পাদকীয় বোর্ডের সদস্য।
  • জাকি ওয়াহহাজ যুক্তরাজ্যের কিংস কলেজ লন্ডনের অর্থনীতির অধ্যাপক।
  • সারা হোসেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এবং বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) অবৈতনিক নির্বাহী পরিচালক।

M. Niaz Asadullah, Professor of Development Economics at Monash University Malaysia, is Head of the Southeast Asia cluster of the Global Labor Organization

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Leave a comment
scroll to top